সারা দেশে রাসেল ভাইপারের বিস্তার

প্রতিবেদক • ঢাকা

প্রকাশ: June 20, 2024, 2:08 p.m.
সারা দেশে রাসেল ভাইপারের বিস্তার

এক সময় বিলুপ্ত বলে মনে করা হতো রাসেল ভাইপার। কিন্তু বর্তমানে দেশব্যাপী এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে ভয়াবহ হারে। বরেন্দ্র অঞ্চল ছাড়িয়ে এখন সাপটি দেখা যাচ্ছে বরিশাল, পটুয়াখালী, চাঁদপুর এমনকি ঢাকার আশপাশেও। ইতিমধ্যে ২৫ টি জেলায় এর অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়েছে। চলতি বছর রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা গেছেন ১০ জন।
দেখতে অনেকটা অজগরের বাচ্চার মতো, দৈর্ঘ্যে ৩ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। এর মাথা চ্যাপ্টা, ত্রিভুজাকার এবং ঘাড় থেকে আলাদা। শরীরে চাঁদের মতো বাদামী রঙের গোলাকার দাগ রয়েছে যা শুকনো পাতা বা ধান ক্ষেতে সহজেই লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করে। 'চন্দ্রবোড়া' বা 'উলুবোড়া' নামেও এটি পরিচিত।


সাধারণত সাপ মানুষকে এড়িয়ে চলে, কিন্তু রাসেল ভাইপার ব্যতিক্রম। নিজেকে বিপন্ন মনে করলেই আক্রমণ করে, এবং আক্রমণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত দ্রুত, ১ সেকেন্ডের ১৬ ভাগের ১ ভাগ সময়ে আক্রমণ সম্পন্ন করতে পারে। রাগান্বিত হলে শব্দ করে ফোঁপাতে থাকে, যেন প্রেসার কুকারের মতো শোনায়।
রাসেল ভাইপারের হেমাটোটক্সিক বিষধর। ছোবলের স্থানে পঁচন ধরে এবং ৫ মিনিটের মধ্যে ক্ষতস্থান ফুলে যায়। এটি ফুসফুস, কিডনিসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।


রাসেল ভাইপারের সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ উচ্চ প্রজনন ক্ষমতা। স্ত্রী রাসেল ভাইপার ২০-৪০ টি বাচ্চা প্রসব করে, এমনকি ৮০ টি পর্যন্ত বাচ্চার রেকর্ডও আছে। এছাড়া প্রাকৃতিক শিকারীদের বিলুপ্তি, যেমন বেজি, গুইসাপ ইত্যাদির সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় রাসেল ভাইপারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবারের প্রাপ্যতা, যেমন ইঁদুর, ব্যাঙ ইত্যাদি রাসেল ভাইপারের প্রধান খাদ্য, যা প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
বন্যপ্রাণী ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মো. আবু সাঈদ মনে করেন, স্থানীয়রা শিয়াল, গুইসাপ, বেজি হত্যা করায় রাসেল ভাইপারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে ইকোসিস্টেমে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, সাপে কামড়ালে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া উচিত।


আরও পড়ুন