বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিজিএমইএ-এফএমটিএ ও বিকেএমইএর সব কারখানা বন্ধের ঘোষণা

প্রতিবেদক • ঢাকা

প্রকাশ: Aug. 6, 2024, 3:32 a.m.
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিজিএমইএ-এফএমটিএ ও বিকেএমইএর সব কারখানা বন্ধের ঘোষণা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহের ভালুকায় বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় হামলা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের সব তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) তাদের সিদ্ধান্তে সঙ্গতিপূর্ণভাবে একই পদক্ষেপ নিয়েছে।

 

বণিক বার্তার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, সকালে জেলার অধিকাংশ পোশাক কারখানা খুললেও আন্দোলনকারীদের চাপের কারণে মালিকরা কর্মস্থল বন্ধ করতে বাধ্য হন। সকাল ৮টায় বিসিক শিল্পনগরী, ফতুল্লা শিল্প এলাকা ও সিদ্ধিরগঞ্জ ইপিজেডে শ্রমিকরা কাজ শুরু করেন, তবে সকাল ৯টার দিকে কায়েমপুরের ফকির নিটওয়্যার ও ফতুল্লার ইউরোটেক্স গার্মেন্টসে হামলা ও ভাঙচুর ঘটে। মালিক পক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় কারখানা বন্ধ করে দেন।

 

বিকেল পৌনে ১০টার দিকে একদল দুষ্কৃতী বিসিক শিল্পনগরীতে মোহাম্মদ হাতেমের মালিকানাধীন এমবি নিটসহ আরও কিছু কারখানায় হামলা চালায়। এরপর সব কারখানা বন্ধ করে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়। হাজার হাজার শ্রমিক চাষাঢ়ায় গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।

বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, "নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সব কারখানা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে পোশাক কারখানা বন্ধ থাকলে বায়াররা আমাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে, যা আমাদের বাজার হারানোর আশঙ্কা তৈরি করবে। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও ডলার সংকটের কারণে আমরা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খাচ্ছি।"

 

তিনি আরো বলেন, "এ শিল্পের লাখ লাখ শ্রমিকের স্বার্থে আন্দোলনকারীদের অনুরোধ জানাচ্ছি, গার্মেন্ট শিল্প ও বন্দরকে অসহযোগ আন্দোলনের বাইরে রাখুন। অন্যথায়, অনেক গার্মেন্টস মাস শেষে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারবে না এবং উৎপাদনে যুক্ত শ্রমিকরা সংকটে পড়বেন।"

 

ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে বণিক বার্তার প্রতিনিধি জানান, আন্দোলনের প্রথম দিনে বেশ কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর করা হয়েছে এবং একটি ট্রাক ও দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের বহনকারী প্রায় ৪০টি গাড়ি ও শিল্পপুলিশের একটি কাভার্ড ভ্যান ভাঙচুর করা হয়। আন্দোলনকারীদের পাথর ছোঁড়ায় চার-পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাস্টারবাড়ি এলাকায় বাদশা গ্রুপের মালিকানাধীন একটি কারখানার প্রধান ফটক ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও কোকা-কোলা, আরিফ টেক্সটাইল, পিএনআইটি কম্পোজিট ও নোমান গ্রুপের কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। মাস্টারবাড়ি এলাকায় স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেডের ২০-২৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং এনভয় গ্রুপের একটি কারখানার সামনে একটি মিনিবাসে আগুন দেওয়া হয়।

 

ময়মনসিংহ শিল্প জোন-৫-এর পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, আন্দোলনকারীরা তাদের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে এবং পাথর ছোঁড়ার ঘটনায় চার-পাঁচজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।


আরও পড়ুন