রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি- সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

প্রতিবেদক • ঢাকা

প্রকাশ: June 21, 2024, 5 p.m.
রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঝুঁকি- সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে, বিশেষ করে পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত জেলা ও চরাঞ্চলে, রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে বেশ কিছু মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই বিষাক্ত সাপ, যা 'চন্দ্রবোড়া' নামেও পরিচিত, অনেকের কাছেই ভীতিকর। প্রায় ৪০০০ সর্পদংশনের রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া অভিজ্ঞ চিকিৎসক ডা. ফরহাদ উদ্দীন হাসান চৌধুরী ফেসবুকে একটি পোস্ট করে রাসেল ভাইপার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। রাসেল ভাইপার বাংলাদেশের তিনটি প্রধান বিষাক্ত সাপের মধ্যে একটি।

এই সাপ আক্রমণাত্মক নয়, বরং সাধারণত বিরক্ত না হলে কাউকে কামড়ায় না। রাসেল ভাইপারের কামড়ে শরীরের রক্ত পাতলা হয়ে রক্তক্ষরণ, কিডনি বিকল, স্নায়ু অবশ, শ্বাসকষ্ট, এমনকি হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। বাংলাদেশে সাপের বিষ প্রতিরোধক অ্যান্টিভেনম রয়েছে, তবে রাসেল ভাইপারের বিষের বিরুদ্ধে এটি পুরোপুরি কার্যকর নয়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের গবেষকরা রাসেল ভাইপারের বিষের বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিভেনম তৈরির জন্য কাজ করছেন।

ডা. ফরহাদ বলেন, দ্রুত চিকিৎসা পেলে রাসেল ভাইপারের কামড় থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। সাপ কামড়ে আক্রান্ত অংশে বাঁধ দেওয়া যাবে না কারণ এতে অঙ্গহানির ঝুঁকি থাকে। সাপ মেরে ফেলে সাপের প্রকোপ দমন করা সম্ভব নয়। সাপের কামড়ে প্রতি বছর ৬০০০ এরও বেশি মানুষ মারা যায়, যার বেশিরভাগই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর। সচেতনতা বৃদ্ধি, দ্রুত চিকিৎসা এবং কার্যকর অ্যান্টিভেনমই রাসেল ভাইপারের কামড় থেকে মৃত্যু রোধের ‍উপায়।

রাসেল ভাইপার বিষাক্ত হলেও, সচেতনতা এবং দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে এর কামড় থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব। বর্ষা ও বর্ষা পরবর্তী সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি। রাসেল ভাইপার সাপের দৈর্ঘ্য প্রায় ১.২ থেকে ১.৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এটি সাধারণত বাদামি বা ধূসর রঙের হয় এবং শরীরের উপর কালো ছাপ থাকে। রাসেল ভাইপার প্রধানত শুষ্ক, উঁচু জমি এবং ক্ষেতের কাছে বসবাস করে।

তবে বর্ষাকালে এবং খাদ্য অনুসন্ধানে এরা মানুষের কাছাকাছি চলে আসে। ঘাস কাটা, জমি পরিষ্কার রাখা এবং রাতে সতর্ক থাকার মাধ্যমে সাপের কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। রাসেল ভাইপারের প্রাকৃতিক শিকারী হিসেবে পাখি, বিড়াল এবং বড় বড় সরীসৃপ রয়েছে, যা এর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রাসেল ভাইপার এবং অন্যান্য বিষধর সাপের বিষয়ে শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

স্থানীয় পর্যায়ে জনসচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে সাপের কামড়ের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। এছাড়া, সাপের কামড়ে আক্রান্ত হলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করা উচিত এবং প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।


আরও পড়ুন