মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সন্তানদের জন্য চাকরি দিতেন রফিকুল ইসলাম

প্রতিবেদক • ঢাকা

প্রকাশ: July 12, 2024, 8:43 p.m.
মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সন্তানদের জন্য চাকরি দিতেন রফিকুল ইসলাম

রাজপথ কোটা সংস্কার নিয়ে তোলপাড় চলছে। আর ঠিক এই সময়ই সামনে এসেছে এক অভাবনীয় ঘটনা! বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম, নিজের দুই সন্তান থাকা সত্ত্বেও, আরও ৭ জনকে 'ছেলে' বানিয়ে তাদের সরকারি চাকরি দিয়েছেন! কিন্তু কিভাবে? রফিকুল ইসলাম, বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার ক্ষিতারেরপাড়া (রানীরপাড়া) গ্রামের একজন বাসিন্দা।

তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন এবং সোনাতলা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডারের দায়িত্বও পালন করেছেন। তার আসল সন্তান দুজন: রাশেদা আক্তার ও মোর্শেদা আক্তার। কিন্তু রফিকুলের আরও ৭ জন 'ছেলে' আছে! আহসান হাবিব হান্নান ও জিয়াউর রহমান: এই দুই ভাইয়ের আসল বাবা সোনাতলার দক্ষিণ রানীরপাড়ার জাফর আলী। হান্নান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের সুযোগ নিয়ে পুলিশে চাকরি নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা জেলা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সে কর্মরত।

জিয়াউর রফিকুলের সনদ ব্যবহার করে সারের ডিলারশিপ পেয়েছেন। বেলাল হোসেন: তার আসল বাবা ক্ষিতারেরপাড়া এলাকার জবেদ আলী। কিন্তু কোটা ব্যবহার করে বেলাল ২০০১ সাল থেকে পুলিশের চাকরি করছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশে কর্মরত। ফরহাদ হোসেন: তার আসল বাবা একই এলাকার জাহিদুল ইসলাম। রফিকুলের সনদ ব্যবহার করে ফরহাদ চাকরি নিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসে। সালেক উদ্দিন: ক্ষিতারেরপাড়ার নায়েব আলীর ছেলে। রফিকুলের সনদ ব্যবহার করে পুলিশ কনস্টেবল হয়েছেন। রাকিব হাসান ও মৌসুমী আক্তার: এদের সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যায়নি।

মুক্তিযোদ্ধা সনদের অপব্যবহার করে এই সকল ব্যক্তিকে 'নিজের সন্তান' হিসেবে দাবি করেছিলেন রফিকুল। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক কমান্ডার হিসেবে তার সমাজে ব্যাপক প্রভাব ছিল। তিনি এই প্রভাব কাজে লাগিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন। অনুমান করা হচ্ছে, রফিকুল এই ভুয়া সন্তানদের কাছ থেকে অর্থের বিনিময়ে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন। এই ধরনের অসৎ কাজের জন্য সরকার একটি তদন্ত শুরু করেছে। সাধারণ মানুষ এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের সাথে এমন প্রতারণামূলক কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আদালত এই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে এবং ভুয়া সন্তানদের চাকরি বাতিলের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, মুক্তিযোদ্ধার নামে বা তার সনদ ব্যবহার করে চাকরি পাওয়া কোনও সম্মানজনক কাজ নয় বরং এটি দেশের সিস্টেমে দুর্নীতি ও অসদাচরণের একটি উদাহরণ।


আরও পড়ুন