যশোরে হোটেল জাবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

প্রতিবেদক • ঢাকা

প্রকাশ: Aug. 7, 2024, 4:06 p.m.
যশোরে হোটেল জাবিরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪

যশোরে আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচতারা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে পৌঁছেছে।

 

অগ্নিদগ্ধ ২৩ জনকে উদ্ধার করে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন ইন্দোনেশিয়ান নাগরিকও রয়েছেন এবং অধিকাংশই আন্দোলনকারী।

 

বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর পাওয়ার পর যশোর শহরে ছাত্র-জনতার একটি মিছিল বের হয়। মিছিলের পর বিক্ষুব্ধরা চিত্রা মোড়ে অবস্থিত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর শুরু করে এবং হোটেলের বিভিন্ন তলায় পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিকেল চারটায় আগুন নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করেন এবং ছয় ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর রাত ১০টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

 

বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার হোটেলের ছাদ থেকে একজনকে উদ্ধার করে এবং ফায়ার সার্ভিসের বিশেষ গাড়ি চারতলা থেকে আরেকজনকে উদ্ধার করে। অগ্নিদগ্ধ ২৪ জনকে গুরুতর অবস্থায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে তাঁদের ঢাকা ও খুলনায় স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন এবং ২৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

 

অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় চারতলা থেকে লাফিয়ে পড়েন মো. সাকিব (১৭) নামে আইসক্রিম কারখানার এক কর্মী। সাকিবের বাবা আলাল উদ্দীন জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে বিজয় মিছিলে অংশ নিতে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে হোটেলে গিয়েছিল। আগুন দেখে নামার সময় ধোঁয়া দেখে কিছুই দেখতে পারেনি, তাই চারতলা থেকে নিচে লাফ দেয়। সাকিবের মুখ, হাত এবং দুই ঊরু পুড়ে গেছে এবং তাকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে।

 

যশোর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দেওয়ান সোহেল রানা জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তৃতীয় তলায় প্রচুর অ্যালকোহল থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়াতে পারে। সিঁড়ি খালি থাকায় আগুনের বিস্তার বৃদ্ধি পায় এবং নিচে নামার পথে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

 

আজ দুপুর ১২টার দিকে পোড়া হোটেল জাবিরে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা যায়। শহরের বিভিন্ন বস্তির বাসিন্দা এবং রিকশা-ইজিবাইক চালকরা হোটেলের ভেতরে গিয়ে পোড়া আসবাবপত্র, টেলিভিশন, কম্পিউটার, ফ্রিজ, এসি ইত্যাদি নিয়ে যাচ্ছেন। পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো উপস্থিতি না থাকায় ভাঙচুর অব্যাহত রয়েছে।

 

হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট হারুন-অর-রশিদ জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ ২৪ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে একজন মারা গেছেন। বাকি ২৩ জনকে ঢাকা ও খুলনায় পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন বিদেশি নাগরিকের পরিচয় ইন্দোনেশিয়া দূতাবাসকে জানানো হয়েছে।


আরও পড়ুন