প্রতিবেদক • ঢাকা
প্রকাশ: June 2, 2024, 10:53 p.m.সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনির একটি অনলাইন বেটিং প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে কাজ করার ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশে জুয়া ও বাজি ধরা আইনত নিষিদ্ধ হলেও, পরীমনির মতো জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের জড়িত থাকা এই বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮ অনুচ্ছেদে জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
২০০২ সালের জুয়া আইন জুয়া খেলা ও প্রচারণাকে অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে। এই আইন অনুসারে, জুয়া খেলার জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা, অথবা উভয়ই প্রদান করা যেতে পারে। জুয়ার প্রচারণার জন্যও একই শাস্তির বিধান রয়েছে। এছাড়া, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অনলাইনে জুয়ার প্রচারণা করলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে। পরীমনির মতো জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের জড়িত থাকা অনলাইন জুয়ার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি করতে পারে, বিশেষ করে যুবসমাজের মধ্যে।
এটি জুয়ার আসক্তিতে হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে, যার ফলে আর্থিক বিপর্যয়, পারিবারিক সমস্যা এবং এমনকি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। অনলাইন জুয়া নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন, কারণ এটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই কারণে, অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে অর্থ পাচারের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, জুয়ার প্রভাবে সমাজের নৈতিক ও সাংস্কৃতিক মানদণ্ডেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলিকে জুয়া ও জুয়ার প্রচারণার বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণা চালানো প্রয়োজন যাতে মানুষ, বিশেষ করে যুবসমাজ, অনলাইন জুয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলিকে জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রদর্শন থেকে বিরত রাখার জন্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জারি করা উচিত। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জুয়া বিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে।
পরীমনির ঘটনা বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি তুলে ধরেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সরকার এবং সমাজের সকল স্তরের মানুষকে এই সমস্যা সমাধানে একসাথে কাজ করতে হবে। শুধু আইন প্রয়োগ করাই যথেষ্ট নয়, সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং তরুণ প্রজন্মকে এই ক্ষতিকর অভ্যাস থেকে রক্ষা করতে হবে। এছাড়াও, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ সংরক্ষণে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।
বিশেষ করে, যেসব জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব সমাজে প্রভাব বিস্তার করেন, তাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে যাতে তারা সমাজের জন্য ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন। তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচারণায় অংশগ্রহণ করা উচিত এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের বিরত রাখা উচিত। এতে করে সমাজে সুস্থ ধারার বিনোদন এবং নৈতিক মূল্যবোধ সংরক্ষণ সম্ভব হবে।
1 month, 2 weeks
2 months, 1 week
3 months, 1 week
3 months, 1 week
3 months, 1 week