প্রতিবেদক • ঢাকা
প্রকাশ: June 14, 2024, 8:37 p.m.কোরবানির ঈদে পরিবারের সাথে ছুটি কাটাতে বৃহস্পতিবারের মতো আজও (শুক্রবার) যাত্রীর চাপ আছে গাবতলী বাস টার্মিনাল ও কল্যাণপুরে। বেলা গড়িয়ে বিকেল হলেও ঘরমুখী মানুষের ভিড় কমেনি। যে পরিমাণ যাত্রী এখনও বাড়ি যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত গাড়ি। এমন অবস্থার সুযোগ নিয়ে কাউন্টারগুলো থেকেও চাওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। কোনো উপায় না পেয়ে যাত্রীরাও বাধ্য হয়ে টিকিট কাটছেন। কথা একটাই, যেভাবেই হোক, যেতে হবে বাড়ি।
শুক্রবার (১৪ জুন) সরেজমিনে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল, কল্যাণপুর, মিরপুর-১ ও মিরপুর-১০ নম্বর ঘুরে দেখা যায়, প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে ফিরতে বাস কাউন্টারগুলোতে ভিড় করেছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রতি ঈদের মতো এ ঈদেও যাত্রীদের থেকে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। বেসরকারি চাকরিজীবী ওসমান গনি পরিবার নিয়ে মিরপুর-১০ নম্বরে এসেছেন নোয়াখালীগামী বাসের টিকিট কাটতে। দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাসের টিকিট পেলেও নির্ধারিত ভাড়ার থেকে ২৫০ টাকা বেশি নেয়া হয়েছে তার কাছ থেকে।
তিনি বলেন, "গতকাল রাতে বাসের টিকিট কাটতে এসেছিলাম। কাউন্টার থেকে বললো সকালে আসতে। যদি টিকিট না পাই তাই ভোর ৪টা থেকে স্ত্রীসহ দুই সন্তান ও বড় বোনকে নিয়ে এসে বসে আছি। দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর বাসের টিকিট পেলাম। তাও আবার অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে।" তিনি আরও বলেন, "অন্য সময় মিরপুর থেকে মাইজদী বাজার নন এসি বাসের ভাড়া নেয় ৪৫০ টাকা। এসি বাসের ভাড়া ৫০০ টাকা। এখন ঈদের সময় দেখে নন এসি বাসের ভাড়া ২৫০ টাকা বাড়িয়ে ৭০০ টাকা ও এসির ভাড়া ৪০০ টাকা বাড়িয়ে ৯০০ টাকা নেয়া হচ্ছে।"
এমন অবস্থা গাবতলী ও কল্যাণপুরেও। গাবতলী বাস টার্মিনালে খুলনাগামী বাসের টিকিট কাটতে এসেছেন ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করা হাসান মাহমুদ। তিনি বলেন, "আমার তো ভাই টিকিট লাগবে। না হলে কেমনে বাড়ি যাব। এরা বলে টিকিট নাই। একটু পরই বেশি ভাড়া দাবি করে টিকিট বিক্রি করে। যতই ভাড়া হোক যাত্রীরাও বাধ্য হয়ে সেই ভাড়াতেই টিকিট কেটে বাড়ি যাচ্ছে।" তিনি আরও জানান, বাস কাউন্টারগুলো এই অতিরিক্ত ভাড়ার সুযোগ নিচ্ছে এবং কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীদের এই দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
এদিকে, কল্যাণপুরে রংপুরগামী বাসের টিকিট কাটতে আসা ব্যবসায়ী মঞ্জুরুল হক বলেন, "ঈদের সময় এই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া খুবই অন্যায়। কিন্তু টিকিট না পেলে তো বাড়ি যেতে পারব না। তাই বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়েই টিকিট কাটতে হচ্ছে।"
এছাড়াও মিরপুর-১ এবং মিরপুর-১০ নম্বরেও দেখা যায় যাত্রীদের একই রকম ভোগান্তি। যাত্রীরা জানান, প্রশাসনের উচিত এই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়টি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে তারা স্বাভাবিক ভাড়ায় বাড়ি ফিরতে পারেন এবং ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেন।
অনেক যাত্রীরা জানান, বাড়তি ভাড়ার কারণে অনেকের বাজেটের মধ্যে থেকে টিকিট কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। বেশ কিছু বাস কাউন্টার থেকে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। কোনো কোনো কাউন্টারে যাত্রীদের জন্য নেই পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা, তাছাড়া ভিড়ের কারণে অনেক যাত্রীকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এর ফলে, নারী ও শিশু যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। সবমিলিয়ে, বাড়তি ভাড়া আর পরিবহন সংকটের এই দুর্ভোগ যাত্রীদের জন্য ঈদযাত্রার আনন্দ ম্লান করে দিয়েছে।
1 month, 2 weeks
2 months, 2 weeks
3 months, 2 weeks
3 months, 2 weeks
3 months, 2 weeks