প্রতিবেদক • ঢাকা
প্রকাশ: Aug. 1, 2024, 5:52 p.m.রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষক নেটওয়ার্কের ডাকা মৌন মিছিলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের আটক করার চেষ্টা করেছে। বৃহস্পতিবার, রাবির শহিদ জোহা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা মৌন মিছিলে অংশ নিতে এসেছিল এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান গ্রহণ করেছিল।
মিছিল চলাকালে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে এবং দুইজনকে আটক করে নিয়ে যায়। শিক্ষকদের প্রবল প্রতিবাদের পর পুলিশ আটককৃত ছাত্রদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। শিক্ষকদের অভিযোগ, পুলিশ তাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে এবং সাংবাদিকদেরও হেনস্তা করেছে। দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের বিভাগীয় প্রতিনিধি আমজাদ হোসেন ও সমকাল পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি অর্পণ ধরকে পুলিশ মারধর ও তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে।
আমজাদ হোসেন বলেন, “শিক্ষার্থীদের আটকের সময় পুলিশ আমার ওপর হামলা চালায়, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে কিল-ঘুষি মারে এবং পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।” তিনি অভিযোগ করেন যে, লাইভ সম্প্রচারের সময় পুলিশ তাকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছে এবং তার পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।
অর্পণ ধর বলেন, “আমার ঘাড় চেপে ধরে আমাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। যখন আমি সাংবাদিক কার্ড দেখাই, সাদা পোশাকধারী একজন আমাকে গোপন সোর্স হিসেবে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।” তিনি জানান, সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেওয়ার পরেও তাকে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সেলিম রেজা নিউটন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং প্রশ্ন তুলেছেন, যারা ছাত্রদের নিয়ে যাচ্ছে তারা কে এবং তাদের কার্যক্রম কতটুকু আইনসম্মত। তিনি বলেন, “এই ঘটনা কোনো বৈধ সরকারের আচরণ হতে পারে না। দেশে তো সামরিক আইন জারি হয়নি। সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা কারা, এবং তাদের কার্যক্রম কতটুকু আইনের আওতায়?”
অধ্যাপক আ-আল মামুন বলেন, “দেশে একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এবং তার দায় সরকারের। বর্তমান পরিস্থিতি রাজনৈতিক সমাধানহীন এবং হাজার হাজার মানুষের মুখ বন্ধ করা যাবে না।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি সহায়তা সেল গঠন করেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে কোনো নিরপরাধ শিক্ষার্থী যাতে হয়রানির শিকার না হয়, তার জন্য দুই সহকারী প্রক্টর নিয়োগ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যা ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষকরা দাবি করেছেন যে, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই ধরনের অশান্তি ও নির্যাতন দ্রুত বন্ধ হওয়া উচিত।
1 month, 2 weeks
2 months, 1 week
3 months, 1 week
3 months, 1 week
3 months, 1 week